দিনাজপুরহাই লাইটস

এক সময়ের কর্মচঞ্চল সেতাবগঞ্জ চিনিকলে এখন ভুতুরে আমেজ

*নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ *ব্যবসা বানিজ্যে মন্দা ভাব *এলাকার মানুষের দাবী দ্রুত সময়ের মধ্যে চালু করা হোক চিনিকলটি


দিনাজপুর জেলার প্রাণ সেতাবগঞ্জ চিনিকল এক সময় শ্রমিক কর্মচারী ও ফ্যাক্টরির শব্দে কর্মচঞ্চল হয়ে থাকতো সেতাবগঞ্জ শহর তথা বোচাগঞ্জ উপজেলা। ১৯৩৩ সালে তৎকালীন জমিদার আবাদি জমি ও শ্রমিক কর্মচারী এবং কর্মকর্তাদের আবাসন সহ মোট ৩৮ হাজার ৬০ একর জমি দিয়ে নির্মান করেন দিনাজপুরের একমাত্র ভারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান সেতাবগঞ্জ চিনিকল। চিনিকলের নিজস্ব জমি ও সাধারণ কৃষকের রোপনকৃত আখ দিয়ে সে সময় বছরে ৩ মাস থেকে ৪ মাস আখ মাড়াই করতো চিনিকলটি।

এরপর চিনিকলটি বয়সের ভারে অনেকটাই অকেজ হয়ে পরে, আখ মাড়াইয়ের স্বক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তখনকার বাংলাদেশের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেঃ এইচ এম এরশাদ (এন ডি সি, পি এস সি) চিনিকলটির পাশে আধুনিক নতুন একটি চিনিকল নির্মান করেন। ১৯৮৩ সালের ১৭ জানুয়ারী সোমবার নতুন চিনিকল এর শুভ উদ্বোধন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেঃ এইচ এম এরশাদ । দীর্ঘ ৩৮ বছর পর গত ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশের ৬টি চিনিকলের সাথে প্রায় ৪ শত কোটি টাকা লোকশানের বোঝা মাধায় নিয়ে সেতাবগঞ্জ চিনিকলটির আখ মাড়াই বন্ধ করে দেয় বর্তমান সরকার।

চিনিকলের প্রায় ৭ শত ৫০ জন শ্রমিকের মধ্যে বর্তমানে শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা নিয়োজিত আছে একশত জনের মত। বাকী শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ দেশের বিভিন্ন চিনিকলে বদলী হয়ে কাজ করছেন। সেতাবগঞ্জ চিনিকলের আখ মাড়াই বন্ধ হওয়াতে চিনিকলের মুল্যবান যন্ত্রাংশ ও আখ আনা নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর এবং ট্রাক্টরের ট্রলি খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে।

ট্রাক্টর এবং ট্রাক্টরের ট্রলিতে জন্ম নিয়েছে হাজারও আগাছা, পরিণত হয়েছে জঙ্গলে। সেই জঙ্গলে বাস করছে বিষাক্ত অনেক প্রানী। দেখে বুঝার উপায় নেই, এই বিশাল জঙ্গলের ভিতরেই আছে চিনিকলটির কোটি কোটি টাকার সম্পদ। একই অবস্থা চিনিকলের কেন ক্যারিয়ারটির। অযতেœ আর অবহেলায় যেন সব কিছুই আজ নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। বোচাগঞ্জ উপজেলার সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীগণ দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতাবগঞ্জ চিনিকলটির আখ মাড়াই চালু করার জোর দাবী জানিয়েছেন। কেননা, চিনিকলের শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মাসিক বেতন প্রাই দেড় কোটি টাকা বোচাগঞ্জ উপজেলা শহরে ব্যবহার হতো। চিনিকলের আখ মাড়াই বন্ধ হওয়াতে এলাকার ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বানিজ্যে দেখা দিয়েছে মন্দা ভাব।
এব্যাপারে সেতাবগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ হুমায়ন কবীর বলেন, এসব ট্রাক্টর অন্য মিলের চাহিদাপত্র আসলে আমরা তা পাঠিয়ে দিব । ট্রাক্টর ও ট্রলি রক্ষনাবেক্ষনের জন্য উন্নত কোন ব্যবস্থা নেই।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button