দেশ

আমরা কারো কাছে মাথানত করব না : প্রধানমন্ত্রী

যোদ্ধা ডেস্কঃ বিশ্ব মঞ্চে আত্মমর্যাদার সাথে মাথা উঁচু করে দেশকে এগিয়ে নিতে সঠিকভাবে নিজেকে গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের মনে রাখতে হবে যে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো ইনশাল্লাহ, এই বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি এগিয়ে যাবে, আত্ম মর্যাদা ও আত্মসম্মান নিয়ে বিশ^ অঙ্গনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আমরা কারো কাছে মাথা নত করবো না। এটি আমাদের অঙ্গীকার। গতকাল রোববার তার কার্যালয়ে অস্বচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি, টিউশন ফি ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সবদিক থেকে এগিয়ে গেলেও স্বাস্থ্যখাতের গবেষণায় বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে বলে এ সময় জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা সব সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের গবেষণা একটি ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে, আর তা হলো স্বাস্থ্যখাত। আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় গুরুত্ব দিচ্ছি…। আমি মনে করি এটিকে আরো গুরুত্ব দেয়া দরকার।

সরকার গবেষণা ও উদ্ভাবন বাড়াতে উপববৃত্তি দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের শিশুরা খুবই মেধাবী এবং তাদের মেধা বিকাশে উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে যা আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। এতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল প্রতিভা অন্বেষণ মেধা বিকাশে একটি মহৎ উদ্যোগ, যেখান থেকে অনেক মেধাবী শিশু বের হয়ে আসছে।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমাদের শিশুরা তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পেয়েছে এবং এখন তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা প্রকাশ পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, কেউ দেশকে পেছনে ঠেলে দিতে পারবে না, অন্ধকারে ফেলে দিতে পারবে না। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সময় এ কথা মনে রাখতে হবে যে এ জাতি বীরের জাতি। তারা কারো কাছে মাথা নত করে না।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে এই দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ো তোলা হবে। এই দেশে থাকবে স্মার্ট জনগণ, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি এবং স্মার্ট সমাজ। আজকের যুগ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণার যুগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্যে নিজেদের প্রস্তুত করতে বলেন।

কৃষি গবেষণায় বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি এখন চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় আরো গুরুত্ব দেয়ার ওপর জোর দেন। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করেছে। সরকার সমুদ্রবিজ্ঞান গবেষণা এবং ব্লু ইকোনমিকে গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ এটি ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর বক্তৃতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সত্যিই আশাবাদী এই দেশকে আর কেউ পিছিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেশনজট ও অস্ত্র সহিংসতা থেকে মুক্ত রাখতে সফলভাবে সক্ষম হয়েছে। ৬-৮ বছর ধরে সেশন-জট ছিল এবং অতীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অস্ত্রের ঝনঝনানি হতো।

প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০০৯ সাল থেকে একটি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় দেশ উন্নয়নের যাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা অন্তত দাবি করতে পারি যে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে ক্যাম্পাসকে সেই পরিবেশ থেকে মুক্ত করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার হার ৭৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি।

সারা বিশ্বে এখন জনগণের দুর্ভোগ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদিও বাংলাদেশের মানুষও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কবলে পড়েছে, তবুও এখানে খাদ্যশস্য পাওয়া যায়, অভাব নেই।

মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাস) এবং এর সমমানের প্রতিষ্ঠানের অস্বচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ উদ্বোধনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষন-২০২৩-(বঙ্গবন্ধু ক্রিয়েটিভ ট্যালেন্ট সার্চ-২০২৩) এর সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বৃত্তি পুরস্কার-২০২২ প্রদানের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button