দেশহাই লাইটস

সেতাবগঞ্জ চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ থাকায় কোন কাজে আসছে না কোটি টাকার বর্জ্য শোধানাগার

তৈরিতেই তুষ্টি বলছেন রসিকজনেরা, বর্জ্য পরিশোধানাগার(ইটিপি) স্থাপনে ব্যায় ৮ কোটি ১০ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা।

যোদ্ধাঃ ডেস্কঃ
দিনাজপুর জেলার প্রাণ সেতাবগঞ্জ চিনিকল এক সময় শ্রমিক কর্মচারী ও ফ্যাক্টরির শব্দে কর্মচঞ্চল হয়ে থাকতো সেতাবগঞ্জ শহর তথা বোচাগঞ্জ উপজেলা। এক সরকারি আদেশে বন্ধ হয়ে যায় সেতাবগঞ্জ চিনিকল লিমিটেড এর আখ মাড়াই। সেই সেতাবগঞ্জ চিনিকলসহ দেশের ১৪ টি চিনিকলে বর্জ্য পরিশোধানাগার(ইটিপি) স্থাপনের উদ্যোগ নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এর বাস্তবায়নাধীন ও বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি) অর্থায়নে বর্জ্য শোধনাগারের কাজ শুরু হয় ১ জুলাই ২০১৮ইং। কাজ শেষ হওয়ার তারিখ ৩০ জুন ২০২০ ইং। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ,বি,এম ওয়াটার কোম্পানী লিঃ ঢাকা সাথে বেধে দেওয়া সময়ের অতিরিক্ত ৩ বছর পার হলেও সেতাবঞ্জ চিনিকলের শোধানাগারটি এখনও কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেনি । শোধানাগার প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যায় ধরা হয়েছে প্রতিটি ৮ কোটি ১০ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা। সেই হিসেবে বন্ধ ৬টি চিনিকলের বর্জ্য শোধানাগার নির্মানে গড় হিসেব মতে মোট ব্যায় ৪৮ কোটি ৬১ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা।
সেতাবগঞ্জ চিনিকল প্রতিষ্ঠার ৮০ বছর পর বর্জ্য শোধানাগার পুরোপুরি তৈরি হওয়ার আগেই বন্ধ হয়ে যায় চিনিকলের চিনি উৎপাদন। ফলে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও আলোর মুখ দেখছে না বর্জ্য শোধানাগারটি। শোধানাগার তৈরিতেই তুষ্টি বলছেন রসিকজনেরা।
গত ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশের ৬টি চিনিকলের সাথে প্রায় ৪ শত কোটি টাকা লোকশানের বোঝা মাধায় নিয়ে সেতাবগঞ্জ চিনিকলটির আখ মাড়াই বন্ধ করে দেয় বর্তমান সরকার। অনেকেই বলছেন, দেশের ১৪টি চিনিকলের মধ্যে ৬টিতে চিনি উৎপাদন বন্ধ করা হবে জেনেও রাষ্ট্রের এই বিশাল অংকের টাকা কেন ব্যায় করা হলো চিনি উৎপাদনে বন্ধ থাকা ৬টি চিনিকলে। যেখানে চিনিকলের শ্রমিক কর্মচারীরা তাদের কর্ম জীবনের শেষ সম্বল গ্রাচুয়িটির টাকা পাচ্ছে না ২০১৬ সাল থেকে। দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনিকলেরই গ্রাচুয়িটির পাওনা ২১৬ জন শ্রমিক কর্মচারির প্রায় ১২ কোটি টাকা। শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে তারা মাঝে মধ্যেই আন্দোলন করছে। বিক্ষোভ বিছিল, মানববন্ধন ও স্মারক লিপি দিচ্ছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। তবুও পাচ্ছেনা শ্রমিকদের পাওনা। সেতাবগঞ্জ চিনিকলের বর্জ্য পরিশোধানাগার(ইটিপি) এখন চিনিকলের সৌর্ন্দযবর্ধক স্থাপনা মাত্র। যা আখ মাড়াই চিনিকলের কোন কাজেই আসছেনা।
সেতাবগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ হুমায়ন কবীর জানান, এই চিনিকলের বর্জ্য শোধানাগারটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ,বি,এম ওয়াটার কোম্পানী লিঃ ঢাকা আমাদের কাছে এখনও হস্তান্তর করে নাই। তবে চিনিকলের উৎপাদন চালু থাকলে স্থাপিত শোধানাগারটির ব্যবহার করে সুফল পাওয়া যেত। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন , অবশ্যই কোন একদিন সেতাবগঞ্জ চিনিকলটি উৎপাদনে ফিরে আসবে এবং বর্জ্য শোধানাগারটি চালু হবে। এই বন্ধ ৬টি চিনিকল চালু হলে গড় হিসেবে প্রায় ২৫ হাজার মেঃটন চিনি স্থানীয় ভাবে প্রতি বছর উৎপাদন করা সম্ভব হবে। তখন চিনির মুল্যে স্থিতি ফিরে আসবে।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button