আ. লীগ-বিএনপির শক্তি প্রদর্শন
যোদ্ধা ডেস্কঃ ঢাকায় আজ বুধবার আওয়ামী লীগ যে শান্তি সমাবেশে অনুষ্ঠিত হবে সেখানে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটাতে চায় দলটি। যার প্রস্তুতি গতকাল মঙ্গলবারও দিনভর নিয়েছে দলটির মহানগরের নেতা-কর্মীরা।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটের সামনের সন্ত্রান ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ওই শাস্তি সমাবেশ। সমাবেশটি শুরু হবে বিকেল ৩টায়। যৌথভাবে যার আয়োজন করবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এর বাইরে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ থানায় থানায় অবস্থান নিবে বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারনী পর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, দলের এ সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিএনপিসহ দেশের মানুষকে একটি বার্তা দিতে চায় আওয়ামী লীগ। এতে বিএনপিসহ বিরোধীদের চাপে থাকবে বলে দলটির নেতারা মনে করে। দলটির নেতারা বলছেন, এ শক্তি প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে বিরোধীদের কাছে বার্তা যাবে যে রাজপথের নিয়ন্ত্রণ আওয়ামী লীগেরই হাতে। এর বাইরে দলের এ সমাগম তা দেশে বিদেশীরাও আওয়ামী লীগের শক্তি বুঝতে পারবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে ওই শান্তি সমাবেশ সফল করতে সংগঠনের ২৪টি থানা ও ৭৫টি ওয়ার্ড কমিটিকে বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা ইতিমধ্যে প্রচার প্রচারণাসহ মঙ্গলবারও শেষ প্রস্তুতি নিয়েছেন। সমাবেশ ছড়িয়ে দেওয়া হবে নবাবপুর, ঠাটারীবাজার, হাইকোর্ট, পল্টন, বিজয়নগর ও দৈনিক বাংলার মোড় পর্যন্ত, এসব এলাকায় সেভাবেই টানানো হবে মাইক।
সমাবেশ নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ইনকিলাবকে বলেন, আমরা সমাবেশে এক লাখ লোক সমাগমের টার্গেট করছি। এ জন্য আমরা মহানগর উত্তর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগসহ দলের সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও আসবে।
তিনি জানান, দলের ওই সমাবেশটি বায়তুল মোকারারামের জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে হলেও সমাবেশকে ঘিরে চারপাশে মাইক লাগানো থাকবে। ফলে এসে পাশের এলাকা থেকেই সমাবেশ শোনা যাবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন রিয়াজ ইনকিলাবকে বলেন, সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, ওই সমাবেশ করার বিষয়ে গত সোমবার ১৯ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বর্ধিত করে। সে সভায় ওই সমাবেশ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছেন, সমাবেশ সফল করতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় টিসিবি ভবনে দলের প্রতিনিধি সভা করা হয়। এতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান উপস্থিত ছিলেন।
এ দিকে ঢাকার বায়তুল মোকাররাম দক্ষিণ গেটের আওয়ামী লীগের সমাবেশ নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন থানার নেতারা ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রচার ও প্রচারণায় রয়েছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে ওই সমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। সেই সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রস্তুতি সভা করেছে আওয়ামী লীগ। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক উইনিয়াম প্রলয় সমদ্দার বাপ্পি ইনকিলাবকে বলেন, দলের ওই সমাবেশকে ঘিরে মঙ্গলবার দিনজুড়েই থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা হয়েছে। কোথাও কোথায়ও ইউনিট পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীরা। সমাবেশ ঘিরে প্রচার প্রচারণা নিয়ে তিনি বলেন, প্রচার প্রচারণা ভালই আছে। ফোনসহবিভিন্নভাবে নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরের এক নেতা জানিয়েছেন, সমাবেশকে ঘিরে সংগঠনগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নিয়ে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপও গ্রুপ খোলা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তো বোঝাই যায় আওয়ামী লীগের একটি বড় সমাবেশের প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে।
অপরদিকে আজ ঢাকার সাতটি (সাভার, ধামরাই, আশুলিয়া, দোহার, নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ ও কেরানীগঞ্জ মডেল) সাংগঠনিক থানায়ও আলাদা অবস্থান করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান তরুণ। তিনি বলেন, আমরা নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রতিটি থানায় অবস্থান করব। জনগনের শন্তি রক্ষর্থে কেউ যাতে আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখা হবে। আমরা রাজপথে অবস্থান করবো। পাশাপাশি বায়তুল মোকাররাম মসজিদের দক্ষিণ গেটের সমাবেশে অংশ নেব। ঢাকা মহানগরের ওই কর্মসূচি সফল করতে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগও গতকাল মঙ্গলবার একটি বিশেষ বর্ধিত সভা ডেকেছিল। সকাল ১০টায় সংগঠনের তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ত্রাণ ও দূর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আব্দুল বাতেন মিয়া। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলার সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুন।