যোদ্ধা ডেস্কঃ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার আবেদনের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারা (বিএনপি) বলে আর (কর্মসূচির) অনুমতি নিবে না। অবৈধ সরকার থেকে অনুমতি নিবে না। তাহলে অবৈধ সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদন কেন করে? এ সরকার যদি অবৈধ হয়, এখানে কেন আবেদন? আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেছেন, মিটিং করতে গেলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি না নিলে খবর আছে। পালাবার পথ পাবেন না। গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত কৃষক মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপিকে জিজ্ঞেস করতে চাই- ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম কই? আলটিমেটাম ভুয়া, এক দফা ভুয়া, বিএনপি হচ্ছে ভুয়া, ৩২ দল ভুয়া, আন্দোলন ভুয়া, ক্ষমতা দখল ভুয়া, ভুয়ার দল। বিএনপি নেতারা শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে চায় উল্লেখ করে বক্তব্য দিচ্ছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সে দিন আর বেশি দূরে নয়, বিএনপির রাজনীতিই কবরস্থানে যাবে। কবরস্থানে যাওয়ার সময় এসেছে।
রাজপথ দখল করার অধিকার বিএনপির নেই বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা রাস্তা দখল করবে তাদের খবর আছে। আগুন নিয়ে আসলে আমরা হাত পুড়িয়ে দেব। যারা ভাঙচুর করতে আসবে তাদের হাত ভেঙে গুড়িয়ে দেব। বিএনপির হাতে বাংলাদেশ ও দেশের গণতন্ত্রণ নিরাপদ নয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের কাছে জনগণের ভোট নিরাপদ নয়। বাংলাদেশের নিরাপত্ত্বা, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার আদর্শ নিরাপদ নয়। এরা একাত্তরের বাংলাদেশ চায় না। এরা চায় খুন আর সন্ত্রাসের বাংলাদেশ। এসময় ‘চোরচোট্টার’ দল বিএনপিতে ভালো মানুষ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশের আলো নিভে যাবে বলে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশকে আমরা আর কোনও কালো হাতে ছেড়ে দেব না, অন্ধকারে ফিরে যেতে দেব না।
নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জোরদার খেলা হবে। সামনে নভেম্বর, তারপরে ডিসেম্বর, তারপরে জানুয়ারি। ফাইনাল খেলা খেলা হবে। কৃষক ভাইয়ের খেলা হবে। প্রস্তুত হয়ে যান। নেত্রী আসছেন তিনি ডাক দেবেন। তিনি যখন ডাক দেবেন রাস্তায় নেমে আসবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। আজ বাংলাদেশ কৃষিতে, খাদ্যে স্বয়ংসর্ম্পূর্ণ। চালের দাম এই মুহুর্তে নিম্মমূখি। দুই-তিন বছরের চেয়ে অনেক কম। কিছু পণ্যের দাম একটু বেশি, যেমন- পেয়াজ-আলু। এটা উৎপাদনের জন্য। নানা কারণে উৎপাদন কম হয়েছিল। গত বছর পেয়াজ ফেলে দিতে হয়েছে। আলু বিক্রি করতে পারে নাই। কৃষক এবার আলু কম (চাষ) করেছে। আমি জানি- রিকশ-ভ্যান চালক, নি¤œ আয়ের মানুষদের কষ্ট হচ্ছে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি এগুলোর দাম কমানোর জন্য। তিনি আরও বলেন, এক সময় আমরা খাদ্যের ঝুলি নিয়ে সারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াতাম। আজ সেই বাংলাদেশ খাদ্যের স্বয়ংসম্পূর্ণ।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, আপনারা খুনির দল, আপনারা সন্ত্রাসীদের দল। তাহলে কোন কারণে আপনারা ক্ষমতায় যেতে চান। কথা বলার আগে নিজের চেহারা আয়নায় দেখুন। এই অবৈধ দলের নেতা, কীভাবে সরকারকে অবৈধ বলছে? দেশের মানুষ আর কখনো আপনাদের দলকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই আপনাদের রাস্তায় আস্ফালন করে লাভ নেই। আর যদি নির্বাচনে বাঁধা দেন, তাহলে রাজপথে প্রতিহত করব।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল। আমাদের এ উন্নয়ন-অগ্রগতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। আগামী নির্বাচন যথাসময়ে এ সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। কেউ আমাদের নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। আমরা আর কাউকে দেশের কোনও ক্ষতি করতে দিব না।
কৃষক লীগ সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, দলের আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, মির্জা আজম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন কৃষক লীগ সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি।