দেশ

দুই প্রধানমন্ত্রীর সংক্ষিপ্ত এই আলোচনায় আসন্ন শীর্ষ বৈঠকে দুই দেশের কোথায় কোথায় অগ্রাধিকার থাকবে, সে বিষয়গুলো তুলতে পারেন তারা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের ইস্যু, বিশেষ করে তিস্তা-গঙ্গার মতো বিষয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার মতো বিষয়সহ বাণিজ্য ও সংযুক্তির বিষয়গুলো আসার কথা রয়েছে। অন্যদিকে, মোংলা বন্দর ভারতের জন্য বিশেষভাবে ব্যবহারের পদক্ষেপের বিষয়টি তুলতে পারে দিল্লি। আগামীকাল সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় পৌঁছার কথা।

যোদ্ধা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গতকাল নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফর সঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। জানা গেছে, আজ সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদানের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লি সফর করছেন। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনের একটি বিশেষ ফ্লাইট গতকাল বেলা ১১টা ৫১ মিনিটে (স্থানীয় সময়) এখানে ভিভিআইপি বিমানবন্দর পালাম এয়ার ফোর্স স্টেশনে অবতরণ করে।

পালাম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব (সিপিভি ও ওআইএ) মুকতেশ পরদেশি, বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশনার প্রনয় ভার্মা এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান অভ্যর্থনা জানান। নয়াদিল্লিতে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা আজ রোববার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদানের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন। পরে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে যোগ দেবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রোববার নয়াদিল্লিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

তিনি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি ত্যাগ করতে সোমবার বিকাল ৫টায় (নয়াদিল্লি সময়) পালাম এয়ার ফোর্স স্টেশনে পৌঁছাবেন এবং একই দিন রাত ৮টায় (বাংলাদেশ সময়) তার ঢাকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
এর আগে বুধবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টেলিফোনে কথোপকথনের সময় তার সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান। শেখ হাসিনা এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।
মোদি ৯ জুন সন্ধ্যায় শপথ নিবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ ২৯৩টি আসনে বিজয়ী হয়েছে যেখানে বিরোধী ইন্ডিয়া জোট ২৩৪টি আসন পেয়েছে।
শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালসহ বিশ্ব নেতারা এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এতে ৮ হাজারের বেশি বিশিষ্টজন উপস্থিত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মোদিকে অভিনন্দন জ্ঞাপনকারী প্রথম বিদেশি নেতাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন অন্যতম যা দুই নেতার মধ্যে উষ্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্কের প্রতিফলন।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের (এনডিএ) নিরঙ্কুশ বিজয় লাভে নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। অভিনন্দন বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের নেতা হিসেবে, আপনি ভারতের জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা বহন করেন।’

ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো জানিয়েছে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ বিজয় লাভ করার পর নরেন্দ্র মোদি শেখ হাসিনার কাছ থেকে একটি অভিনন্দন টেলিফোন কল পেয়েছেন। নির্বাচনে বিজয় লাভের পর শেখ হাসিনার উষ্ণ শুভেচ্ছার জন্য মোদি তাঁকে ধন্যবাদ জানান। মোদি বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে, যা গত এক দশকে নজিরবিহীনভাবে জোরদার হয়েছে।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর মাধ্যমে শেয়ার করা এক বার্তায় মোদি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গণমুখী অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করতে তিনি একসঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ রয়েছেন। এ দুই নেতা বিকশিত ভারত ২০৪৭ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ অর্জনের লক্ষ্যে নতুন করে দায়িত্ব পালনকালে ঐতিহাসিক ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে আরও গভীর করার জন্য একসাথে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button