পিএসসির প্রশ্নফাঁস : আটককৃত ১৪ জনের ব্যাংক হিসাবে মোটা অঙ্কের লেনদেন
যোদ্ধা ডেস্কঃ প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ৬ জনসহ ১৪ জনের ব্যাংকিং লেনদেন খতিয়ে দেখছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এতে জানা গেছে, তাঁদের প্রত্যেকের নামে অন্তত ৫টি থেকে সর্বোচ্চ ২০টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। তাঁদের বৈধ আয়ের সঙ্গে ব্যাংক হিসাবের লেনদেন অনেক বেশি। ১৭ জনের মধ্যে ১৪ জনের ব্যাংক হিসাবে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেন হয়েছে।
সিআইডির তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সবকিছু যাচাই-বাছাই করে, অবৈধ অর্থের লেনদেন কোন পর্যন্ত গড়িয়েছে, তা খতিয়ে দেখে অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হবে।
সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই, ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই, এমন মানুষের সঙ্গেও অভিযুক্তদের আর্থিক লেনদেন হয়েছে। অবৈধ অর্থনৈতিক লেনদেনের এটাই বড় প্রমাণ। এর সঙ্গে যাঁরাই জড়িত, তিনি পিএসসির যত বড় কর্মকর্তাই হোক, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গ্রেপ্তার পিএসসির কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ ১৭ জনের বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গত তিন থেকে চার বছরে ২৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেনের তথ্য মিলছে। ব্যাংকিং চ্যানেলে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে পিএসসির উপপরিচালক আবু জাফর, সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলী, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান ও ডেসপাস রাইডার সাজেদুল ইসলামের হিসাবে।
এদিকে, ৫ জুলাই বাংলাদেশে রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদের পরীক্ষা বাতিলের জন্য সুপারিশ করবে সিআইডি। কারণ রেলওয়ের এই নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি সিআইডি নিশ্চিত হয়েছে। ডেসপাস রাইডার সাজেদুল তাঁর জবানবন্দিতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে বলেছেন, পিএসসির উপপরিচালক আবু জাফরের মাধ্যমে তিনি রেলওয়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন পেয়েছেন। এরপর তিনি সেই প্রশ্ন তিন-চারজনের কাছে দেন। যাঁদের কাছ থেকে আগেই টাকা নিয়েছিলেন।
রিটের শুনানি আজ
প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনায় বিচারিক তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনটি আজ রোববার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চে শুনানির জন্য রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বেসরকারি সংগঠন ‘সারদা সোসাইটি’র পক্ষ থেকে এর নির্বাহী পরিচালক মু. আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া রিটটি করেন। রিটে পিএসসির চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশন ও রেলওয়ের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে বলে জানান
রিটকারী আরিফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি জনস্বার্থে রিটটি করেছি। আবেদনে ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলওয়ের ৫১৬টি উপসহকারী প্রকৌশলী পদে অনুষ্ঠিত পরীক্ষা বাতিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে উত্তীর্ণ ২৪তম থেকে ৪৫তম বিসিএস ক্যাডার ও নন-ক্যাডারদের তালিকা তৈরি এবং প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সর্বোচ্চ শাস্তির নির্দেশনা চেয়েছি।’
আ.লীগ নেতা দল থেকে বহিষ্কার
বিসিএসে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মিজানুর রহমানের নাম আসায় দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তি ও নেতা-কর্মীরা জানান, ম্যাক সিক্স প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেড নামে ঢাকায় মিজানুরের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজান।