নাইকো দুর্নীতির মামলার সব সাক্ষীকে আদালতে তলব
যোদ্ধা ডেস্কঃ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য আসামির বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ সকল সাক্ষীকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত রবিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালত এই আদেশ দেন।
এদিন সকালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকের) পক্ষে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ফাতেমা খানম মিলা মামলাটিতে কোন সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির না হওয়ায় সময়ের আবেদন করেন। অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবীরা মৌখিকভাবে সাক্ষী ক্লোজ (বন্ধ) করার আবেদন করেন। শুনানিতে এই আইনজীবীরা বলেন, দুদক গত ৩টি ধার্য তারিখে সাক্ষী হাজির করেনি। এভাবে তারা আসামিদের হয়রানি করছেন। এজন্য মামলায় সাক্ষী ক্লোজ করে আসামিদের খালাস দেওয়া হোক। শুনানি শেষে বিচারক আগামী ১২ সেপ্টম্বর সকল সাক্ষীতে তলব করেছেন।
সংশ্লিষ্ট আদালত সুত্রে জানা গেছে, এ মামলায় বাদীসহ ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। যার মধ্যে বাদীর সম্পূর্ণ সাক্ষী হওয়ার পর বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুল বাকী আংশিক সাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সাক্ষী হাজির না হলে খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য আসামিকে খালাস দিতে পারেন আদালত।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী,বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম । এদের মধ্য প্রথম তিনজন পলাতক রয়েছেন।
জানা গেছে, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলা তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
চার্জশিটের বৈধতা চ্যলেঞ্জ করে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে রীট আবেদন করলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারী করেন। ২০১৫ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট রুল ডিচার্জ করে স্থাগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ অভিযোগে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগে মামলাটি করা হয়।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে অর্থ আত্মসাতের দুর্নীতি মামলায় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। তিনি ওইদিন মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর কারাগারে থাকাবস্থায় চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের মামলায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেয় আদালত। দণ্ডিত হওয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় একই বছর ৩০ অক্টোবর আপিলে হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার সাজা ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় দুই বছর জেলে থাকার পর সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে দুটি শর্তে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় ২০২০ সালের ২৫ মার্চ। বর্তমান অর্ন্তবতীকালিন সরকার গঠিত হওয়ার পর গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করে মুক্তির আদেশ দেন।