খুনি হাসিনাকে ফেরানোর তাগিদ
যোদ্ধা ডেস্কঃ গণহত্যা করে ভারতে পলাতক শেখ হাসিনাকে ফেরানোর দাবি জোরালো হয়ে উঠছে। একই সঙ্গে গণহত্যায় অংশ নেয়া আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে তাকে কোর্টে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সজীব ওয়াজেদ জয়সহ অভিযুক্তদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের লক্ষ্যে বাংলাদেশের পুলিশ প্রধানের (আইজিপি) কাছে গ্রেফতারি পরোয়ানার তালিকা (অভিযুক্তদের নাম) পাঠিয়েছেন। এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। সভা-সমাবেশ-মানববন্ধন করেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এ দাবি তুলেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার নেটিজেনদের দাবি, বাংলাদেশ ২০১৫ সালে উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াকে যে প্রক্রিয়ায় ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে ফ্যাসিন্ট আওয়ামী লীগ সরকার; ভারত ২০২০ সালে যে প্রক্রিয়ায় ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল মাজেদকে যে প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের হাতে হস্তান্তর করেছে; সে প্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনাকে ঢাকার কাছে হস্তান্তরে ভারতের ওপর চাপ দেয়া হোক। ভারত স্বেচ্ছায় খুনি হাসিনাকে না দিলে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে ফেরত আনা হোক।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যায় শেখ হাসিনা। পালিয়ে যাওয়ার আগে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ ও পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে প্রায় এক হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে। রক্তে ভেসে যায় ঢাকার রাজপথ। পুলিশের গুলিতে কয়েকশ’ মানুষকে পঙ্গু এবং কয়েকশ’ মানুষকে অন্ধ করে দেয়া হয়। হাসিনার পৈশাচিকতায় শিশুরা পর্যন্ত রেহাই পায়নি। সহীদউল্লাহ নামের একজন ফেসবুকে লিখেছেন, হাসিনা প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাসিনার বিচারে হাসিনাকে কাঠগড়ায় দেখতে চায় জনতা। ড. ইউনূসকে যেমন আদালতের লোহার খাঁচায় রাখা হয়েছিল হাসিনাকে সেভাবে রাখতে হবে।
জানা যায়, গণহত্যা করে হাসিনা পালানোর ১০ দিন পর ১৫ আগস্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত বাগেরহাটের আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় হাসিনার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। অতঃপর শেখ হাসিনাসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়। একই অপরাধে ব্যক্তির পাশাপাশি দল ও সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। শেখ হাসিনার সঙ্গে অন্য যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা হলেনÑ ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, জুনাইদ আহমেদ পলক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. হারুন অর রশিদ, হাবিবুর রহমান, হারুন অর রশীদ প্রমুখ। ট্র্যাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া শুরুর পর সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোর বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা হবে। এসব ঘটনার তদন্ত জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে গত ১৭ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই মামলায় শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সাবেক মন্ত্রিসভা এবং পুলিশের কয়েকজন সদস্যসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ পরোয়ানা জারি করে আগামী ১৮ নভেম্বরের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল বুধবার আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কার কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। এ সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে পাঠানো হয়েছে। গণহত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।› আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, সংস্কার কাজ শেষ হলে আগামী ৩ নভেম্বরের মধ্যে মূল ভবনে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হবে।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিএনপি, জামায়াত, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, ছাত্র অধিকার পরিষদ, জাগপা, জাসদ, ডিএল, এলডিপি, গণদল, জাতীয় পার্টি (জাফর), বাসদসহ ডান-বাম ও ইসলামী ধারার দলগুলো গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে দিল্লি থেকে ফিরিয়ে এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় তোলার দাবি জানিয়েছেন। তাদের দাবি শেখ হাসিনা ভয়াবহ অপরাধ করেছেন। তিনি গণহত্যা করেছেন অথচ ভারত তাকে আশ্রয় দিয়েছে। দুই দেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ সরকারের হাতে হস্তান্তরের লক্ষ্যে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
জানা যায়, ২০১৩ সালে ভারত-বাংলাদেশ বন্দি বিনিময় চুক্তি করে। ২০১৫ সালে এই চুক্তির আওতায় আসামের স্বাধীনতাকামী সংগঠন উলফার শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়াসহ কয়েকজনকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রত্যার্পণ করা হয়েছিল। আবার ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল ’৭৫-এর হত্যাকাণ্ডের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবদুল মাজেদকে কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। ওই চুক্তির আলোকে ভারত গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে বাধ্য। দু’দেশের বন্দি বিনিময় চুক্তিতে বলা হয়েছে, ন্যূনতম এক বছরের সাজা হতে পারে এমন মামলায় আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেই ভারত বা বাংলাদেশকে পলাতক বন্দি হস্তান্তর করতে হবে। যদি অপরাধ রাজনৈতিক হয়, প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে। তবে হত্যা, গণহত্যা, বোমা হামলা, গুলি করে হত্যা, সম্পত্তির ক্ষতি, গুম-অপহরণ বা জিম্মি করা এবং হত্যার প্ররোচনার মতো অপরাধের মামলায় দুই দেশেরই পলাতক আসামিকে ফেরত দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ওই চুক্তিতে।
২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে না পারলে আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে আন্দোলন করে যাচ্ছি। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ বেশ কয়েকবার আমাদের ওপর হামলা করেছে। নির্বাচনের আগে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে ভরে পাশবিক নির্যাতন করেছে।
১৮ অক্টোবর ভারত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে অপরাধ ও খুনিদের মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রতিবেশী দেশ পরিষ্কারভাবে বলেছে শেখ হাসিনা সেখানে আছেন। তাদের বক্তব্য দেখে মনে হচ্ছে তারা বিগ ব্রাদার সুলভ আচরণ করেছে। শেখ হাসিনা সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী ও খুনি। হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া মানে অপরাধ, অন্যায়কে সমর্থন করা এবং খুনিদের প্রশ্রয় দেওয়া। আদালত থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, সেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য এ সরকারকে সময় দেওয়া হবে। তবে মনে রাখতে হবে, এক-এগারোর মতো কোনো পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয়। এ সরকারের দায়িত্ব হবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা। জুলাই ও আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে, তার দায়ে শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। শেখ হাসিনাসহ গণহত্যায় জড়িতদের ফাঁসি ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। গণদলের চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি। আওয়ামী লীগের কাছে কালো টাকা রয়েছে, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এসব কালো টাকা ছড়াচ্ছে হাসিনা ও জয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাকে কাঠগড়ায় হাজির করতে হবে।
জানা গেছে, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল) একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। যার প্রধান কাজ আন্তর্জাতিক পুলিশকে সহায়তা করা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুলিশ বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করে থাকে ইন্টারপোল। এর সদর দপ্তর ফ্রান্সের লিয়োঁ শহরে। ইন্টারপোলের কাছে প্রত্যর্পণ, আত্মসমর্পণ বা অনুরূপ আইনি পদক্ষেপের জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে এবং সাময়িকভাবে গ্রেফতার করার জন্য ইন্টারপোল রেড অ্যালার্ট জারি করে। রেড নোটিশ হলো এক ধরনের অনুরোধ। অনুরোধকারী দেশের বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা জারি করা আদালতের আদেশের ওপর ভিত্তি করে এই রেড নোটিশ জারি করা হয়।
ইন্টারপোলের বর্তমান সদস্য দেশ ১৯৪। বাংলাদেশ ইন্টারপোলের সদস্য। কারও নামে মামলা থাকলে সদস্য দেশের সরকার ইন্টারপোলে ডকুমেন্ট পাঠালে রেড নোটিশ জারি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দুই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট বা তথ্যাদি পাঠাতে হয়। অতঃপর যে দেশে অপরাধী ও অভিযুক্ত অবস্থান করে সে দেশের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে সংশ্লিষ্ট দেশে ফেরত পাঠায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের অনেকেই দাবি করেছেন, হিন্দুত্ববাদী ভারত গণহত্যাকারী হাসিনাকে কূটনৈতিক তৎপরতায় ফেরত না দিলে ইন্টারপোলের সহায়তা নেয়া যেতে পারে।
তবে গত ১৭ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে ফেরানোর বিষয়ে এক মাস সময় দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে তাকে ফেরত আনার জন্য যা যা প্রয়োজন সেটি অবশ্যই আমরা করব।