রাজনীতি

বিএনপি কৌশলে আওয়ামী লীগকে আক্রমণকারী বানাতে নাটক করছে : ওবায়দুল কাদের

যোদ্ধা ডেস্কঃ মার্কিন ভিসা নীতির পর বিএনপি নাটক শুরু করেছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি মনে করেন দলীয় জনসভায় বিএনপি যে হামলার অভিযোগ করেছে তা আসলে তাদের একটি কৌশল। যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে আক্রমণকারী বানাতে চায় বিএনপি।

গতকাল শনিবার রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে তিনি এমন অভিযোগ করেন। দলীয় প্রধান সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে ওই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় কনফিগার ব্যাপারি শপিং কমপেক্সের সামনে সড়ক বন্ধ করে ওই সমাবেশ করায় ব্যাপক জনভোগানিÍর সৃষ্টি হয়।

গত শুক্রবার ঢাকার কেরানীগঞ্জ বিএনপির জনসমাবেশে দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরীর ওপর হামলার অভিযোগ করে বিএনপি। বিএনপি দাবি করে, সমাবেশের মাঝামাঝি সময়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তারা বিএনপির সমাবেশের ওপর পাথর, ইট নিপেক্ষ করতে থাকে। এর প্রতিবাদ করে শুক্রবার বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে দলটি। এ বিষয়টিকে ‘নাটক’ আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নাটক খেলা শুরু হয়ে গেছে। কেরানীগঞ্জে নাটক, খাগড়াছড়িতেও নাটক। নাটক বানাচ্ছে, আওয়ামী লীগকে আক্রমণকারী হিসেবে সাজাতে এই নাটক।

তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জে বিএনপির নাটক ধরা খেয়েছে। নতুন ভিসা নীতিতে আমেরিকা বলেছে, সুষ্ঠু নির্বাচনে যারাই বাঁধা দিবে তাদের ভিসা বন্ধ করে দিবে। এখানে আমাদের কিছুই নেই, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করি। সর্বশেষ গাজীপুরে দেখিয়ে দিয়েছি, আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু করবো। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করবো তাতে বাইরের কে ভিসা নীতি দিল, নিষেধাজ্ঞা দিলো, এ নিয়ে আওয়ামী লীগের, শেখ হাসিনার কোন মাথা ব্যথা নেই।

তিনি বলেন, আমরা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, কাজেই কোনো দেশী বিদেশী কাউকে আমরা ভয় পাই না। আমরা আমাদের নীতিতে অটল হয়ে নির্বাচন চাচ্ছি। খেলা হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন তারা চায় না, তাই তাদের ভয় হচ্ছে।

আমেরিকার নতুন ভিসানীতিতে বিএনপির গলা বসে গেছে, মুখ শুকিয়ে গেছে এমন উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেব, ভয় পাচ্ছেন কেন, নির্বাচনকে ভয় পাচ্ছেন কেন? আসলে তারা ভয় পাচ্ছে শেষ হাসিনাকে। তাদের সবচে বড় শত্রু শেখ হাসিনা। জনগণের কাছে সবচে জনপ্রিয় নেতা।

তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই নির্বাচন সুষ্ঠুু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করবো। গাজীপুরে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে দিয়েছি। সামনের দিনে বাংলাদেশে চারটি সিটি করপোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনে অবাধ নির্বাচন হবে। সবাই অংশগ্রহণ আমরা চাই।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মার্কিন ভিসা নীতিতে আমাদের লাভ হলো, তারা নালিশ করেছে নিষেধাজ্ঞা দিবে! সে নিষেধাজ্ঞা কই? নির্বাচনে বোমা মারলে, গাড়ি ভাঙচুর করলে তারাই ভিসানীতির আওতায় আসবে। আমরা আমাদের নীতিতে অটুট, আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করেন। তিনি নিজের কথা ভাবেন না, ভাবেন দেশের কথা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্যোগের মধ্যে এগিয়ে যাওয়ার অপর নাম আওয়ামী লীগ।খেলা হবে, এই দুর্যোগেও খেলা হবে। বৃষ্টি বাদলেও হবে। আমরা প্রস্তুত, খেলা হবে…। ফাইনাল খেলা আগামী নির্বাচনে। নৌকা বনাম ধানের শীষ খেলা হবে। বাংলার মানুষ ধানের শীষ চায় না। ওরা বলে ধানের শীষ, মানুষ বলে পেটে বিষ। কেউ কেউ বলে সাপের বিষ।

এর আগে ওই সমাবেশ উপলক্ষ্যে রাজধানীর মধ্য বাড্ডার সড়ক বন্ধ করে দেয় আওয়ামী লীগ। রামপুরা-বাড্ডা সড়ক ওই বন্ধ করে দিলে ব্যাপক জন দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়। রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় কনফিগার ব্যাপারি শপিং কমপেক্সের সামনে বিকেল ৪টায় সমাবেশে শুরু হওয়ার আগে বিকেল ৩টা থেকে এ সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক যাত্রীকে গণপরিবহন থেকে নেমে হাঁটতে দেখা যায়। সমাবেশের কারণে বাড্ডার প্রগতি স্মরণীতে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচিসহ মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Back to top button