ড. ইউনূসকে নিয়ে বিবৃতি দিতে খরচ হয়েছে দুই মিলিয়ন ডলার
যোদ্ধা ডেস্কঃ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে যে ১৬০ বিশ্বনেতা পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছেন, সে জন্য দুই মিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এত টাকা ড. ইউনূস কোথায় পেয়েছেন, সে প্রশ্নও তুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেছেন, নোবেল বিজয়ীরা যে বিবৃতি দিয়েছেন, সেই বিবৃতির জায়গা (বিজ্ঞাপন) কিনতে দুই মিলিয়ন ডলার লাগে। হিসাব করেন, দুই মিলিয়ন ডলার। আমাদের দেশের পত্রিকায় একটি বিজ্ঞাপন দেবেন, সেটির স্পেসের একটি হিসাব আছে। মার্কিন পত্রিকায় দুই মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে যে বিবৃতি তিনি দিয়েছেন, সেই টাকা কোথায় পেয়েছেন? এই অর্থ কোথা থেকে এল? গতকাল বুধবার সচিবালয়ে জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশ সচিবালয় বহুমুখী সমবায় সমিতি এই কর্মসূচির আয়োজন করে। বিএনপি ওয়ান-ইলেভেনের দুঃস্বপ্ন দেখছে এমন অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুলরা আন্দোলন করে গোলাপবাগের গরুর হাটে হোঁচট খেয়েছেন। আন্দোলন এখন আর জমে না। বাজারে ভাটা পড়েছে। এমতাবস্থায় ড. ইউনূসকে নিয়ে আবার নতুন খেলা শুরু করেছেন তারা। বিএনপি ওয়ান-ইলেভেনের দুঃস্বপ্ন দেখছে। আন্দোলন করে শেখ হাসিনাকে হটাতে পারলেন না। কীভাবে হটাতে হবে? ওয়ান-ইলেভেনের মতো ড. ইউনূসের নেতৃত্বে একটি নতুন সরকার হবে- এমন কথাবার্তায় বাজার সরগরম রয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি সিঙ্গাপুর গেছেন চিকিৎসা করতে। সেখানে বসে তিনি ড. ইউনূসকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বলে আখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পর ইউনূস কোনো শোক প্রকাশ করেননি। জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর একটা কথাও বলেননি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি সেই দুঃস্বপ্ন দেখছে কি না জানি না। ওয়ান-ইলেভেনে ইউনূস কম চেষ্টা করেননি। তখনো তার খায়েশ ছিল, সেই খায়েশ পূর্ণ হয়নি। বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বের অনেক মোড়লের অনেক স্বপ্ন রয়েছে। যারা ইউনূসের মামলা স্থগিত করতে বলেন, মামলা কীভাবে স্থগিত হবে? মামলার কাগজপত্র, দলিল-দস্তাবেজ ঠিক আছে কী না, দেখুন। তিনি আরও বলেন, আপনারা হাওয়ায় একটি বিবৃতি ছেড়ে দিলেন। আবার এর সঙ্গে একটু দ্বিধা লাগে, যখন অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করা হয়। তারা বাংলাদেশের নির্বাচনকে বানচাল করতে চান। বাংলাদেশে নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে ভন্ডুল করতে নতুন প্ল্যাটফর্ম করতে চান। পরিষ্কার বলতে চাই, বাংলাদেশের মাটিতে এই অশুভ খেলা আমরা খেলতে দেব না। ড. ইউনূসের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন, এই ড. ইউনূস আমাদের শহীদ মিনারে কোনোদিন গেছেন? জাতীয় স্মৃতিসৌধে কোনোদিন গেছেন? আমাদের বন্যা, জলোচ্ছ্বাসে তিনি কখনো এসেছেন? তিনি কী কখনো সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন? ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ভয়াবহ করোনায় সময়ও তিনি কোনো কথা বলেননি। আমাদের দেশে রক্তের বন্যা বইয়ে যায়, ড. ইউনূস কথা বলেননি। আমি চাই, যেই মানুষ আমার সুখে-দুঃখে নেই, সেই মানুষটির জন্য আমাদের এত মায়াকান্না কেন? তিনি আমাদের সুখ-দুঃখ ও কষ্টের সময় নেই। তার জন্য আমাদের এত দরদ কেন? আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির মহাসচিব সিঙ্গাপুর থেকে প্রতিদিন বিবৃতি দেন। আমিও চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাই। কিন্তু কখনো সেখান থেকে বিবৃতি দিই না। তাঁকে যদি প্রশ্ন করি, কেন একজনের জন্য বিবৃতি দিলেন। তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, তাই বলে কি অপরাধ থেকে অব্যাহতি পাবেন? যিনি শ্রমিকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন, তাঁর মতো নোবেলজয়ী আমাদের দরকার নেই। সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, তিনি শ্রমিকের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শ্রমিকরা। সভায় অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব হোসেন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা বক্তব্য দেন।