দেশ

নির্বাচন ভন্ডুলে ‘ আন্তর্জাতিক’ ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

যোদ্ধা ডেস্কঃ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভন্ডুল করার জন্য ‘ আন্তর্জাতিক’ ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। তিনি বলেছেন, আজকে অন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশের নির্বাচন ভন্ডুল করতে চায়। শোনা যাচ্ছে, নির্বাচনের তফসিল হলে নাকি বাংলাদেশকে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। তিনি এও বলেছেন, আজকে আবার নতুন করে বিদেশী বেনিয়াদের, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির খপ্পরে পরে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ কায়েম করা হচ্ছে। তিনি বলেন, তবে তা হতে দেওয়া হবেনা। প্রতিমন্ত্রী রবিবার দিনাজপুরের বিরল সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিরল উপজেলা যুবলীগ আয়োজিত যুব ও তারুণ্যের সমাবেশে এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভন্ডুল করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অবরোধ দেওয়া হচ্ছে, এই অবরোধ বাংলার মানুষ মানে না।’ কেউ নির্বাচন ভন্ডুল করতে পারবে না। তিনি বলেন, সব জায়গায় একই স্লোগান, নৌকা। নৌকা।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকে আবার নতুন করে বিদেশী বেনিয়াদের, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির খপ্পরে পরে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ কায়েম করা হচ্ছে। কারণ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিরা বাংলাদেশকে আফগানস্তান, লিবিয়া, সিরিয়া, ইরাক বানাতে চায়। ওই দেশগুলোতে যে অবস্থান এখন সেই রকম একটি অবস্থা এদেশেও তৈরী করতে চায়। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, মানবতা যখন মুখ থুবড়ে পরেছে, ওই ফিলিস্তিনে নারী-শিশুদের হত্যা করার মধ্য দিয়ে। কিন্তু সেখানে মানবতার কথা বলা হয় না। এদেশে এসে মানবতার কথা বলা হয়। কিন্তু ফিলিস্তিনে যে ঘটনা ঘটছে এটা বাংলাদেশে হতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ হতে দিবে না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা এককালে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে পরাজিত করেছে। সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাকে পরাজিত করেছে। সেই পরাজিত শক্তি আবার বাংলাদেশে ছোবল মারতে চায়। বাংলাদেশকে কলোনীতে পরিণত করতে চায়। এটা হতে দেওয়া যাবে না। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি।’ তিনি বলেন, বিরলের মানুষ আজকে প্রমাণ করেছে, যে কোন সন্ত্রাসী দলের হরতাল অবরোধে এ এলাকাযর মানুষ অতীতেও ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না। বাংলাদেশে সন্ত্রাস দিয়ে উন্নয়ন ছাপিয়ে দেওয়া যাবেনা। আপনারা দেখেছেন, গত ২৮শে অক্টোবর, ঢাকায় যেভাবে সন্ত্রাস চালানো হয়েছে, পুলিশ ভাইকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, যেভাবে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো ঘটে নাই। তিনি আরো বলেন, আমরাও আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, কিন্তু এভাবে আমরা কখনো পুলিশকে হত্যা করি নাই। এভাবে আমরা কখনো প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করি নাই। আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করেছি। ‘আমরা জীবন দিয়েছি কিন্তু কখনো আমরা জীবন কেড়ে নেই নাই। আমাদের সেই ইতিহাস নাই। আমাদের অনেক নেতা জীবন দিয়েছে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করা হয়েছে, ৫’শ জায়গায় সিরিজ বোমা হামলা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন কখনো সন্ত্রাসে রুপ নেই নাই।’ ২০১৪ সালে নির্বাচন বানচাল করার জন্য স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেওয়া হলো। সড়কের গাছ কেটে ফেলা হলো। এভাবে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের জনপদ তৈরীর চেষ্টা করা হলো। আমরা দেখলাম, খালেদা জিয়া ২০১৫ সালে ৯৩ দিন হরতাল অবরোধ দিয়ে দেশের কৃষকদের হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তার বিরুদ্ধে দেশের মানুষ দাঁড়িয়েছিল, সেই অবরোধ সফল হয়নি।

বাংলাদেশ বদলে গেছে উল্লেখ করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকে যুবকরা, তরুণরা মনে করে, আজকের বাংলাদেশ শেখ হাসিনার কাছে নিরাপদ। তারা নিজেদের কর্মক্ষম করে গড়ে তোলার জন্য নিজেদের তৈরী করছে। তিনি আরো বলেন, আজকে তরুণদের দিয়ে সন্ত্রাস করানো যায় না। তাদের দিয়ে দেশ বিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনা করা যায় না। তিনি বলেন, আজকে তরুণরা আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিজেদের তৈরী করছে। শেখ হাসিনার কাছে বাংলাদেশ, পথ হারাবে না আমাদের মাতৃভূমি।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছর যাবৎ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মায়ের মমতা দিয়ে, বোনের স্নেহ দিয়ে, এই বাংলাদেশকে একটি নাগরিক রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য, তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। আজকে বাংলাদেশ বদলে গেছে, বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রুপসা থেকে পাথুরিয়া, আজকে একত্রিত হয়ে গেছে। গতকাল কক্সবাজারে রেলওয়ে স্টেশনে এবং রেল লাইন উদ্বোধন হয়ে গেছে। কক্সবাজারে গভীর সমুদ্র বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছে। সেখানে সাড়ে ১৪ কিলোমিটার আমাদের গভীর সমুদ্রবন্দরের চ্যানেল উদ্বোধন করেছেন, প্রধানমন্ত্রী। আজকে প্রধানমন্ত্রী, এই দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঘোড়াশাল সার কারখানা তিনি উদ্বোধন করেছেন। আমার কৃষক বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। সেই কথা চিন্তা করেই এই সার কারখানা আজকে উদ্বোধন হয়েছে। আগামীকাল তিনি (প্রধানমন্ত্রী) খুলনা যাবেন, সেখানে তিনি এমন বহুমুখী পদক্ষেপ উদ্বোধন করবেন। খুলনা অঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষ সেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করার জন্য অধির অপেক্ষায় আছে। তিনি বলেন, আগামী ১৪ নভেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ সারা দেশে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ডের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই উন্নয়ন দেশকে আগামী দিনের পৃথিবীর সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়ার জন্য। আজকে তরুণদেরকে, আগামী দিনের পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই বাংলাদেশকে যাতে এগিয়ে নিতে পারে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সে জন্য দেশকে সেইভাবেই সাজাচ্ছেন। এই বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ করা হয়েছে। এই বাংলাদেশ বদলে গেছে, পদ্মা সেতু হয়েছে, বঙ্গবন্ধু টানেল হয়েছে, এই বাংলাদেশ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়েছে,মেট্রোরেল হয়েছে, পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত রেললাইন চলে যাচ্ছে, শুধু বিরলের নয়, সমগ্র বাংলাদেশর যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে।

মংলা সমুদ্রবন্দরকে আপগ্রেড করা হয়েছে এমন উল্লেখ করে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, গতকালকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গভীর সমুদ্র বন্দরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন। পায়রা বন্দরের কার্যক্রম চালু হয়েছে। বাংলাদেশে কয়েকটি নদী বন্দর ছিল, আগামীকালকে সেই সাতক্ষিরার বসন্তপুর নদীবন্দর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ৪৫টি নদী বন্দর উদ্বোধন হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

বিরল উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিরল পৌরসভার মেয়র সবুজার সিদ্দিকি সাগর, সাধারণ সম্পাদক রমা কান্ত রায়, বিরল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button